গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া ফুটবলারই বিশ্বকাপে নায়ক!
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ, পুরো বিশ্বের নজর ছিল সেদিকেই। আর এমন মঞ্চে আলো ছড়ালেন এন্নার ভ্যালেন্সিয়া। দারুণ খেলে হয়ে গেলেন নায়ক। ইকুয়েডরের এই ফরোয়ার্ড কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আড়াই মিনিটের মাথায় আয়োজক দেশের জালে বল জড়িয়ে দিয়েছিলেন।অফসাইডের কারণে সেই গোল বাতিল হয়ে যায়। তবে তাতে দমে যাননি ভ্যালেন্সিয়া।
ইকুয়েডর পায় ২-০ গোলের জয়। দুটি গোলই ভ্যালেন্সিয়ার। ফলে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের নায়ক হয়ে রইলেন তিনিই। ইকুয়েডরের অধিনায়ক প্রথম গোলটি করেন পেনাল্টি থেকে, ১৬ মিনিটের মাথায়। পরের গোলটি করেন হেডে, ৩১ মিনিটে। এতে করে বিশ্বকাপে পাঁচটি গোল করা হয়ে গেছে ভ্যালেন্সিয়ার। দেশের হয়ে যেটি রেকর্ড।
অথচ ছ’বছর আগে এই ভ্যালেন্সিয়ার বিরুদ্ধে তার দেশেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। বিনা পারিশ্রমিকে শিশুশ্রমের পক্ষে ছিলেন তিনি। সেই কারণেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র দেখে বড় হয়েছেন ভ্যালেন্সিয়া। ইকুয়েডরে জন্ম হলেও তার শরীরে রয়েছে আফ্রিকার রক্ত। ইকুয়েডরের ক্লাব এমেলেকে তিনি যখন যোগ দেন, তার প্রায় কিছুই ছিল না। ক্লাবেই রাত কাটাতেন তিনি।
অন্য কোথাও থাকার মতো টাকা ছিল না তার কাছে। অনেক সময় খাবার কেনার টাকাও জুটতো না। তারপরও ফুটবল ছাড়েননি। ৩৩ বছর বয়সী ভ্যালেন্সিয়া এখন ইকুয়েডরের সেরা স্ট্রাইকার। দেশের হয়ে ৭৫টি ম্যাচে ৩৭টি গোল করে ফেলেছেন তিনি। এর মধ্যে দু’টি এলো রোববার। ১০ বছরের আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ারে দেশকে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন ভ্যালেন্সিয়া।
কিন্তু বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে আয়োজক দেশের বিপক্ষে জয় তুলে নেওয়া সেগুলোর মধ্যে অবশ্যই আলাদা হয়েই থাকবে। যদিও ইকুয়েডরকে চিন্তায় রাখবে ভ্যালেন্সিয়ার চোট। কাতারের বিপক্ষে ম্যাচে ৭৭ মিনিটের মাথায় চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। দলের সেরা তারকা কোনো কারণে ছিটকে গেলে ইকুয়েডরের স্বপ্ন ধাক্কা খাবে নিঃসন্দেহে।