রেকর্ড গড়ে নয় হাজারি ক্লাবে রুট
জো রুট কেন ব্যতিক্রম সেটি আরও একবার দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। নটিংহামে ড্র হয়েছিল ইংল্যান্ড-ভারত আলোচিত পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট। সেখানে অধিনায়ক যদি ৬৪ ও ১০৯ রানের প্রতিরোধগড়া ইনিংস দুটি না খেলতেন তাহলেও বৃষ্টিও ইংলিশদের বাঁচাতে পারত না! এবার লর্ডসে দলকে কোণঠাসা অবস্থা থেকে উদ্ধার করলেন অপরাজিত ১৮০ রানে। ফলে ভারতের ৩৬৪ রানের জবাবে ৩৯১ রান করে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে যায় তার দল। এর মধ্য দিয়ে রেকর্ড বইয়ের অনেক পরিসংখ্যানই এলমেলো করে দিয়েছেন ৩০ বছর বয়সী রুট। ইংল্যান্ড অধিনায়ক হিসেবে পেয়েছেন এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ ৫টি সেঞ্চুরি। অভিষেকের পর সবচেয়ে কম সময়ে ৯ হাজার টেস্ট রানের পথে গড়েছেন বিশ্ব রেকর্ড। ক্যারিয়ারে ২২ সেঞ্চুরির ১১টিই ১৫০+ রানের, যার মধ্যে ক্রিকেটের মক্কা লর্ডসে চার বার, এমন কীর্তি নেই আর কারও।
২২৯ রানে চতুর্থ এবং ২৮৩ রানে পঞ্চম উইকেট হারানো ইংল্যান্ড যে এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে লিড পাবে, অনেকেই ভাবেননি। আর সেটা হয়েছে রুটের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ের কল্যাণে। ৩২১ বলে ১৮ চারে অপরাজিত ১৮০ করা স্বাগতিক অধিনায়ককে সাজ ঘরে ফেরানোর কোনো রাস্তা খুঁজে পাননি ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ক্যারিয়ারের ২২তম, আর সব মিলিয়ে এই বছর ১০ টেস্টে ৫টি সেঞ্চুরি হয়ে গেল রুটের। আর কোনো ইংলিশ অধিনায়ক এক পঞ্জিকাবর্ষে এতগুলো টেস্ট সেঞ্চুরি করতে পারেননি। ৪ সেঞ্চুরিতে রেকর্ডটি এতদিন রুটসহ যৌথভাবে ছিল গ্রাহাম গুচ (১৯৯০), মাইক আথারটন (১৯৯৪) ও এ্যান্ড্রু স্ট্রউসের (২০০৯)। এই সিরিজে আরও তিনটিসহ এই বছর সামনে আরও টেস্ট আছে ইংল্যান্ডের। রুটের সুযোগ আছে দেশের রেকর্ড নতুন উচ্চতায় নেয়ার এবং বিশ্বরেকর্ড গড়ার। ‘অধিনায়ক’ হিসেবে এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড রিকি পন্টিংয়ের, ২০০৬ সালে ৭টি। সেঞ্চুরির পর আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করেন রুট। ১১৩ রান করে পা রাখেন ৯ হাজার টেস্ট রানে। ইংল্যান্ডের হয়ে আগে কেবল একজনই পেয়েছেন এই অর্জনের দেখা, এ্যালিস্টার কুক। ২০৬ ইনিংসে ৯ হাজার হয়েছিল কুকের। রুটের লাগল ১৯৬ ইনিংস। সময়ের হিসেবে অবশ্য কুককে ছাড়িয়ে বিশ্বরেকর্ডই গড়ে ফেলেছেন রুট। ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর ভারত সফরে নাগপুরে অভিষেক। মাত্র ৮ বছর ২৪২ দিনেই হয়ে গেল তার ৯ হাজার। কুকের লেগেছিল ৯ বছর ৮৯ দিন। ক্যারিয়ারের ১০ বছরের কম সময়ে ৯ হাজার রান করতে পেরেছেন কেবল এই দুজনই। একটা রেকর্ডে অবশ্য রুটের আগে কুক। টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে কম বয়সী ব্যাটসম্যান হিসেবে ৯ হাজার করেছেন কুকই। ৩০ বছর ১৫৯ দিন বয়সে এই কীর্তি গড়েছিলেন তিনি, রুটের বয়স ৩০ বছর ২২৫ দিন (বয়সের রেকর্ডে বিবেচনায় নেয়া হয় ম্যাচ শুরুর দিন)। ইংল্যান্ডের নেতৃত্বে এখন ১১টি টেস্ট সেঞ্চুরি হয়ে গেল রুটের। আর কেবল একটি সেঞ্চুরি করলেই ছুঁয়ে ফেলবেন কুকের আরেকটি রেকর্ড। তবে ঐতিহাসিক লর্ডসের একটি রেকর্ডে সবাইকে ছাপিয়ে গেছেন রুট। এ নিয়ে চার ইনিংসে ১৫০-এর বেশি রান পেয়েছেন রুট। লর্ডসে তার চেয়ে বেশি ১৫০ রানের ইনিংস খেলতে পারেননি আর কোনো ব্যাটসম্যান। সব মিলিয়ে টেস্টে ১১ বার ১৫০+ রান করেছেন রুট। ইংল্যান্ডের হয়ে এমন রেকর্ডের মালিক একমাত্র তিনিই।