সর্বকালের সেরা ইংলিশ ক্রিকেটার হতে পারেন স্টোকস : বাটলার
রোববার (১৩ নভেম্বর) মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। তাতে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সাথে বর্তমানে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটেও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংলিশরা। যা আগে করতে পারেনি কোনো দল।
আর ২০১৯ ওয়ানডে ও ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডকে শিরোপা জিতিয়ে যিনি মাঠ ছেড়েছেন তিনি দলটির অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। অর্থাৎ, সাদা বলের ক্রিকেটের দুই ফরম্যাটের যে তিনটি বিশ্বকাপ জিতিছে ইংলিশরা তার মধ্যে দুটি জয়ের নায়ক স্টোকস। তাই আলোচনা চলছে “স্টোকস কি ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার?” তা নিয়ে।
এ বিষয়ে নিজেদের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের পর কথা বলেছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার। পাকিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে মাত্র ১৩৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামে ইংল্যান্ড। ৪ ওভার না যেতেই দলের দুই টপ অর্ডার অ্যালেক্স হেলস ও ফিল সল্টকে দলীয় ৩২ রানের মাথায় হারায় তারা। এমন সময় ব্যাট হাতে আসেন স্টোকস।
৪৫ রানের সময় আউট হয়ে ফেরেন অধিনায়ক বাটলারও। দলেল বিপদ আরও বাড়ে। কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রেখে শেষ পর্যন্ত ৫২ রান করে ইংল্যান্ডকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেই মাঠ ছাড়েন স্টোকস। আরেকটি বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে আরেকবার ব্যাট হাতে জ্বলে উঠে দলকে শিরোপা জেতানোয় কারো কারো চোখে ইতোমধ্যেই ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার বনে স্টোকস। এ নিয়ে কথা বলেছেন বাটলারও।
ভারতে ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের শেষ ওভারে কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের কাছে টানা চারটি ছক্কা হজম করে দলকে হারান স্টোকস। সেই তিনিই ২০১৯ সালে ইয়ন মরগ্যান ও ২০২২ সালে বাটলারের অধীনে দুই বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে লেখলেন রূপকথা।
তিন বছর আগে লর্ডসে ইংল্যান্ডের শিরোপা জয়ে স্টোকসের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরে মরগ্যান বলেছিলেন, “দেশে ফিরে সবাই আশা করি পরবর্তী বেন স্টোকস হওয়ার চেষ্টা করছে।”
লর্ডসের ওই বীরত্ব গাঁথার ৩ বছর পর এমসিজি দেখল স্টোকসের আরেকটি দুঃসাহসিক ইনিংস। নিজের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করলেন ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে। তাতে আসল আরেকটি বিশ্বকাপ।
ফাইনাল ম্যাচের আগে স্টোকসের কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে ব্যাটিং গড় ছিল ১৯ যে কারণে এবারের টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপে নিজের স্থায়ী জায়গা ছিল বললেই চলে। ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় কখন তাকে উপরে, আবার কখন তাকে নিচের দিকে নামতে হয়েছে। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার করা অপরাজিত ৪২ রানের স্কোর বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগায়।
ফাইনালে ২ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর যখন স্টোকস নামেন, তখন ধীরগতিতে ব্যাটিং শুরু করেন এই বাঁহাতি। শেষ পর্যন্ত তিনি ক্রিজে থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
বাটলার বলেন, ৪৯ বলে ৫২ রান তার সবচেয়ে সাবলীল ইনিংস ছিল না বা সম্ভবত সে যতটা পারে তেমন শটে বলের টাইমিং করেনি। তবে সে কখনই লড়াই না করে নেমে হেরে যাবার মতো খেলোয়াড় নয় এবং শেষ পর্যন্ত লড়েইয়ে থাকে সে। তাকে পেয়ে আমরা অত্যন্ত ভাগ্যবান, এবং সে ইংলিশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।”
এছাড়া একইসাথে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নের তকমা পাওয়ায় ইংল্যান্ডের এই দলটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সাদা বলের দল হিসেবে আলোচনায় থাকবে বলে বলে মনে করেন বাটলার। সেইসাথে ফাইনাল জয়ের পর ইংলিশদের সাদা বলের দলের দলপতি জানালেন বিশ্বকাপ জিতে গর্বিত তারা।