বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশ-বান্ধব স্টেডিয়াম এডুকেশন সিটি
আর মাত্র ক’টা দিন। এরপরই পর্দা উঠতে যাচ্ছে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত বিশ্বকাপ ফুটবলের। কাতারে অনুষ্ঠিত হবে ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ। ৩২ দলের ফুটবল লড়াই দেখার অপেক্ষায় গোটা বিশ্ব। শুধুমাত্র ফুটবলের লড়াই নয়, এই ক্রীড়া মহাযজজ্ঞের সাথে জড়িয়ে আছে আরও অনেক কিছু। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় নিজেদেরকে প্রস্তুত করেছে আয়োজক দেশ কাতার। যেখানে স্টেডিয়াম আছে বড় অংশ জুড়ে। বিশ্বকাপের জন্য সম্পূর্ণ নতুন স্টেডিয়াম গড়ে তুলেছে বিশ্বকাপের আয়োজকরা। সেই স্টেডিয়ামগুলোর বিস্তারিত ধারাবাহিকভাবে তুলা ধরা হবে। আজকের প্রতিবেদনে থাকছে বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশ-বান্ধব স্টেডিয়াম এডুকেশন সিটি।
কাতারের আল রাইয়ানে অবস্থিত এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম। কাতার ফাউন্ডেশনের এডুকেশন সিটির বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে অবস্থিত। বিশ্বকাপের পরে স্টেডিয়ামটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাথলেটিক দলগুলোর ব্যবহারের জন্য ২৫,০০০ আসন রেখে দিবে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে স্টেডিয়ামটিতে প্রথম আনুষ্ঠানিক ম্যাচের আয়োজন করা হয়।
নির্মাণশৈলী ও নকশার খাতিরে এটিকে ডায়মন্ড ইন ডেজার্ট অর্থাৎ, মরুভূমির হীরা নামে বেশি ডাকা হয়। সূর্যের আলো স্টেডিয়ামটিতে পড়লে চকচক করে ওঠে পুরো রাইয়ান। নৈসর্গিক রূপ প্রতিফলিত হয় শহরজুড়ে। হীরার আকৃতির এই স্টেডিয়ামে সহজেই যাওয়া যাবে সড়কপথে কিংবা মেট্রোতে। বিশ্বকাপের পর এটির আসন সংখ্যা ২৫ হাজারে নামিয়ে আনা হবে।
এই স্টেডিয়ামে ৪০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা রয়েছে। স্টেডিয়ামটিতে গ্রুপ পর্বের ৬টি, শেষ ষোলো ও কোয়ার্টার ফাইনালের একটি করে সর্বমোট ৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ২০২১ ফিফা আরব কাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই স্টেডিয়ামেই। সৌদি আরব, জর্ডান, ওমান, কাতার, ফিলিস্তিন, লেবানন, সুদান ও তিউনিসিয়ার মোট ৫টি ম্যাচ আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছিল এডুকেশন সিটি।
এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামকে বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব স্টেডিয়াম বলার কারণ হচ্ছে, এখানে ২০ শতাংশ সবুজ কাঁচামাল ব্যবহৃত হয়েছে। কাতারের ঐতিহ্যবাহী ইসলামিক স্থাপত্যের সঙ্গেও মিশে গেছে স্টেডিয়ামটির অত্যাধুনিক নকশা। এর বাইরের দিকে প্রিজমের মতো জ্যামিতিক আকৃতির নকশায় সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত চকচক করতে থাকে। আর রাতের বেলা স্টেডিয়ামটির সাম্নের অংশে ডিজিটাল লাইটের সৌন্দর্য্য দর্শনার্থীদের চোখ ধাঁধিয়ে দেয়।
স্টেডিয়ামটি প্রথম নির্মাণ করা হয়েছিল ২০০৩ সালে। বিশ্বকাপ সামনে রেখে ২০১৬ সালে নতুন করে এর সংস্কার কাজ শুরু হয়। ২০২০ সালে নতুনভাবে নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর একটি ভার্চুয়াল ইভেন্টের মাধ্যমে করোনায় ফ্রন্টলাইন কর্মীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে স্টেডিয়ামটির উদ্বোধন করা হয়।
এখানে বিশ্বকাপের মোট ৮ ম্যাচের প্রথমটি হবে ডেনমার্ক ও তিউনিসিয়ার মধ্যে, ২২ নভেম্বর। উরুগুয়ে ও দক্ষিণ কোরিয়া খেলবে ২৪ নভেম্বর। পোল্যান্ড ও সৌদি আরবের মধ্যে তৃতীয় ম্যাচ হবে ২৬ নভেম্বর। এই স্টেডিয়ামে চতুর্থ ম্যাচ হবে দক্ষিণ কোরিয়া ও ঘানার, ২৮ নভেম্বর। পঞ্চম ম্যাচ খেলবে তিউনিসিয়া ও গতবারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ৩০ নভেম্বর। দক্ষিণ কোরিয়া ও পর্তুগাল ষষ্ঠ ম্যাচ খেলবে ২ ডিসেম্বর। সপ্তম ম্যাচ হবে ৬ ডিসেম্বর, গ্রুপ এফ-র প্রথম ও গ্রুপ ই-র দ্বিতীয়ের মধ্যে। অষ্টম ম্যাচ হবে ৯ ডিসেম্বর, শেষ আটের লড়াই এটি।