পাকিস্তান, না নিউজিল্যান্ড?
মধ্যপ্রাচ্যে (সংযুক্ত আরব আমিরাত) গত বছর টি ২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে ছিল না এশিয়ার কোনো প্রতিনিধি। এবার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অল-এশিয়ান ফাইনালের হাতছানি। স্বাগতিক ও গতবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে দর্শকের ভূমিকায় রেখে আজ শুরু হচ্ছে ফাইনালে ওঠার লড়াই।
সিডনিতে আজ প্রথম সেমিফাইনালে গতবারের রানার্সআপ নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি পাকিস্তান। আগামীকাল অ্যাডিলেডে দ্বিতীয় সেমিতে দেখা হবে ভারত ও ইংল্যান্ডের। চার সেমিফাইনালিস্টের মধ্যে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় অনেকেই ফেভারিট মানছেন নিউজিল্যান্ড ও ভারতকে।
কিন্তু প্রথম সেমিতে ফেভারিট তত্ত্বে আস্থা রাখার উপায় নেই। চিরকালের অননুমেয় পাকিস্তান যে খেলাটির বিখ্যাত গৌরবময় অনিশ্চয়তার সূত্র মিলিয়েই কেটেছে শেষ চারের টিকিট। প্রথম দুই ম্যাচে শেষ বলে নাটকীয় হারের পর টানা তিন জয়েও শেষরক্ষা হতো না বাবর আজমদের। যদি না দক্ষিণ আফ্রিকার চোকার স্বত্বা জেগে উঠত।
এভাবেই অনেক ‘যদি’, ‘কিন্তু’র সমীকরণ মিলিয়ে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৯৯২ বিশ্বকাপ জিতেছিল ইমরান খানের পাকিস্তান। প্রতিপক্ষ ও প্রেক্ষাপট মিলে যাওয়ায় উজ্জীবিত পাকিস্তান এখন আরেকটি রূপকথার স্বপ্নে বিভোর। নিউজিল্যান্ডও ছেড়ে কথা বলবে না। এক সময় কিউইদের বলা হতো সেমিফাইনালের দল। ওয়ানডে ও টি ২০ মিলিয়ে শেষ চার বিশ্বকাপের তিনটিতে ফাইনালে উঠে গা থেকে সেই তকমা খুলে ফেলেছে তারা। এবার শেষ ধাপ পেরিয়ে শিরোপার স্বাদ পেতে উন্মুখ নিউজিল্যান্ড। দলীয় ভারসাম্যে পাকিস্তানের চেয়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে তারা।
সেমির ভেন্যু সিডনিতে অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলংকার বিপক্ষে দাপুটে জয়ে ডেভন কনওয়ে ও গ্লেন ফিলিপস খেলেছিলেন ৯২ ও ১০৪ রানের দুটি বিধ্বংসী ইনিংস। পাকিস্তানের টপঅর্ডারের কেউ এখনো সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। তবে সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিতে পারে শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, হারিস রউফ ও শাদাব খানকে নিয়ে গড়া পাকিস্তানের দুরন্ত বোলিং আক্রমণ। বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ও বাড়তি প্রেরণা হতে পারে পাকিস্তানের। সবমিলিয়ে প্রতিপক্ষকে সর্বোচ্চ সমীহই করছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন, ‘ফল যে কোনো দিকে যেতে পারে। দুদলই ভালো ক্রিকেট খেলে সেমিতে উঠেছে। পাকিস্তানের পেস আক্রমণ অসাধারণ। অভিজ্ঞ ও ম্যাচ জেতানো ক্রিকেটার আছে তাদের। ফাইনালে যেতে নিখুঁত ক্রিকেট খেলতে হবে আমাদের।’
পাকিস্তানের বড় দুর্বলতা অধিনায়ক বাবরের পড়তি ফর্ম। পাঁচ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৩৯ রান। তবে পাকিস্তানের মেন্টর ম্যাথু হেডেনের বিশ্বাস সেমিতে জ্বলে উঠবেন বাবর, ‘আমরা জানি ঝড় ওঠার আগে আবহাওয়া থমথমে থাকে। আমার বিশ্বাস, বাবরের কাছ থেকে বিশেষ ইনিংস দেখতে যাচ্ছি আমরা।’