সাত বছর পর আবারও ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের হাতছানি

50

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

‘আচ্ছা! চট্টগ্রামের উইকেট কেমন? জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটও কি শেরে বাংলার মত মরা? নির্জীব? মন্থর আর নীচু বাউন্সি?’

৪ ডিসেম্বর রাতে বাংলাদেশের ১ উইকেটের অবিস্মরণীয় জয়ের পর থেকে এ সিরিজ কভার করতে আসা ২ ভারতীয় সাংবাদিকদের একজনের প্রশ্ন ওই একটিই। দিল্লী থেকে আসা মনোজের ঘুরে-ফিরে সেই একই কৌতুহল, চট্টগ্রামের উইকেটও কি ঢাকার মত? নাকি একটু ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি বা স্পোর্টিং?

মনোজের কথায় পরিষ্কার, তার ধারনা শেরে বাংলায় বাংলাদেশকে হারানো কঠিনই হবে ভারতীয়দের। এ উইকেটে লিটন, সাকিব, মিরাজরা অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ, সাবলীল। এবং হোম অব ক্রিকেটের পিচ টাইগারদের টিম কম্বিনেশন, অ্যাপ্রোচ ও অ্যাপ্লিকেশনের সঙ্গে অনেক বেশি লাগসই।

কাজেই ঢাকার চেয়ে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটকেই নিরাপদ ভাবতে শুরু করেছেন মনোজ। সেটা যে এমনি এমনি, তা নয়। ইতিহাস আর পরিসংখ্যানও তাই বলছে।

ইতিহাস সাক্ষী দিচ্ছে ৭ বছর আগে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ যখন প্রথমবার ভারতকে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ এ হারিয়েছিল, তখনো ঢাকায় প্রথম ২ ম্যাচ জিতেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছিল মাশরাফি বাহিনী।

সিরিজ নিশ্চিতের পর অবশ্য এই শেরে বাংলায় তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ হেরেছিল টাইগাররা। চট্টগ্রামের পিচ তুলনামূলক ব্যাটিং সহায়ক। বল ঢাকার চেয়ে একটু দ্রুত ব্যাটে আসে। বাউন্সটাও একটু বেশি থাকে। স্পিন করে কম। সেখানে রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুলের গড়া ভারতীয় উইলোবাজদের হাত খুলে খেলা থেকে বিরত রাখা কঠিন। আর তাতেই বাংলাদেশের বোলিং শক্তি মানে সাকিব ও মিরাজের কার্যকরিতা যায় কমে।

অনেকেরই বিশ্বাস, ঢাকার তুলনামূলক স্লো ও লো উইকেট বাংলাদেশ দলের জন্য অনেক বেশি সহায়ক। বাংলাদেশের ব্যাটার ও বোলরদের বিশেষ করে স্পিনারদের জন্য বাড়তি সহায়ক ক্ষেত্র হিসেবে পরিগণিত হয়।

সাকিব ও মিরাজরা ঢাকায় যতটা কার্যকর হবেন, চট্টগ্রামে ততটা হবেন না বা হন না- তাই ভাবা হচ্ছে বাংলাদেশের সিরিজ নিশ্চিতের তুলনামূলক শ্রেয়তর ক্ষেত্র হচ্ছে শেরে বাংলা। মূলতঃ সে কারনেই ভারতীয় সাংবাদিক মনোজ একা নন, বাংলাদেশ ভক্ত ও সমর্থকের বড় অংশের ধারনাও তাই।

কাজেই যা করার ঢাকাতেই করতে হবে। ২০১৫ সালের মত সিরিজ নিশ্চিত করতে হলে এবার ঢাকাতেই সিরিজ নিশ্চিত করতে হবে লিটন, সাকিব, মিরাজদের।

তবে উইকেট যত অনুকুলই থাকুক না কেন, বাংলাদেশের পারফরমেন্সের গ্রাফ উন্নত করতে হবে। প্রথম ম্যাচে যে সব ব্যাপার পক্ষে এসেছিল, তা যে আবারও পক্ষে থাকবে- এমন ভাবার কোনো কারণ নেই।

একইভাবে আবারো শেষ উইকেটে মিরাজ আর মোস্তাফিজের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে জয় ধরা দেবে, সে সম্ভাবনাও কম। মোট কথা, বাংলাদেশের সাফল্য নিশ্চিত করতে হলে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং- ক্যাচিং সব বিভাগেই ভাল করতে হবে। প্রথম ম্যাচের ভুল ত্রুটি শুধরে নিয়ে ব্যাটিংটাও ভাল করতে হবে।

ভারতীয়রা প্রথম দিন ১৮৬‘তে থেমেছে বলেই পরের ম্যাচেও অত কম রান করবে- তা ভাবাও ঠিক হবে না। ধরে নিতে হবে বিরাট, রোহিত, শিখর ধাওয়ান আর লোকেশ রাহুলরা একই ভুলের পূনরাবৃত্তি করবেন না বা করতে চাইবেন না। তারা ঠিক উইকেটের গতি, প্রকৃতি আর বলের ম্যুভমেন্ট দেখে ও বুঝে খেলবেন।

বোলাররাও নিশ্চয়ই শেরে বাংলার গতি, বাউন্স ও ম্যুভমেন্ট-এর সাথে মিল রেখে বোলিং করতে প্রাণপন চেষ্টা করবেন। তাতে করে রোহিত শর্মার দলের পারফরমেন্স উন্নত হবে, এটা ধরে নিয়েই বাংলাদেশকেও সব বিভাগে ভাল খেলতে হবে। তবেই জয়ের দেখা মিলতে পারে। আর জেতা মানেই ৭ বছর পর আবার ভারতের সাথে ওয়ানডে সিরিজ বিজয়ের উৎসবে মেতে ওঠা।

লিটনে দল কি তা পারবে? সময়ের কাছে তোলা থাক এ প্রশ্নের উত্তর।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.